লেভেল সিক্সটিন (Level 16) – ২০১৮ মুভি রিভিউ (কানাডিয়ান অসাধারণ থ্রিলার মুভি এটি)

Bangla Subtitleফেব্রুয়ারি 1, 2022

লেভেল সিক্সটিন নামটা শুনে অনেকের মনে হতে পারে যে ১৬ বছর বয়সী রমনীদের নিয়ে গড়া হয়তো কোনও অশ্লীল ধারার মুভি। সেমনটা ভেবে থাকলে, আমি বলব এই ধারণা একেবারেই ভুল, কারণ এই মুভিতে কোনোরকম অশ্লীলতা কিংবা অসামঞ্জস্যপূর্ণ সিন নেই। মুভির শুরুরদিকে কিছুটা সাধারণ মনে হলেও শেষটা দেখে রীতিমতো চমকে যাবেন। আর অসাধারণ থ্রিলের কাজটা যে করেছেন মানে লেখিকা এবং ডিরেক্টর হিসেবে যে ছিলেন তার নাম হচ্ছে Danishka Esterhazy. যার ঝুলিতে অবশ্য একাধিক মুভি ছাড়াও রয়েছে বেশি কিছু টিভি সিরিজ। আর হ্যাঁ, তার প্রথম পছন্দ নিঃসন্দেহে সাইফাই। সাইফাই জনরাকে ঘিরেই তার অধিকাংশ মুভি তৈরি হয়েছে এবং এখনও চলছে।

লেভেল সিক্সটিন মুভিটির ইনফো

মুভিঃ লেভেল সিক্সটিন
ইন্ডাস্ট্রিঃ কানাডা
ভাষাঃ ইংলিশ
দেশঃ কানাডা
রানটাইমঃ ১০২ মিনিট
রিলিজ সালঃ ২০১৮
আইএমডিবি রেটিংঃ ৬/১০
পার্সোনাল রেটিংঃ ৬.৫/১০
পরিচালকঃ ডেনিশ এস্টারহাজি
কাস্টঃ কেটি ডগলাস, সেলিনা মার্টিন, সারা ক্যানিং
জনরাঃ ড্রামা, সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার

লেভেল সিক্সটিন মুভিটির চরিত্র গুলো

শুরুর দিকে দু’জন এতিম মেয়েকে তাদের ইচ্ছা, স্বপ্ন নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। যেখানে তারা উল্লেখ করে, তাদেরকে লালন-পালনের জন্য অনেক বড় বড় পরিবার থেকে প্রস্তাব আসবে এবং দু’জন একই সাথে একই বাড়িতে যাবে। প্রধান চরিত্রে তাদেরকেই দেখা যাবে। একজন Katie Douglas যে কিনা অভিনয় করেছে ভিভিয়েন নামক চরিত্রে, এবং অপরজন Celina Martin, যে কিনা অভিনয় করেছে সোফিয়া চরিত্রে। যেহেতু সবাই অল্পবয়সী তাই তাদের অভিনয় নিয়ে আমি কিছুটা সন্দিহান ছিলাম, কিন্তু দেখার পর আমি সত্যিই অবাক হয়েছি, সবাই যার যার অবস্থানে অসাধারণ অভিনয় করেছে।

লেভেল সিক্সটিন মূল প্লট সমূহ

এমন যদি হয়, জন্মের কিছুদিন পর থেকে অর্থাৎ আপনি বুঝতে শুরু করার পর মূহুর্ত থেকেই কিছু প্রাতিষ্ঠানিক ব্যক্তিদের ছায়াতলে বড় হতে থাকেন। তাদের দেয়া আদেশ, নির্দেশ সঠিকভাবে পালন করতে থাকেন। তাহলে আপনার গন্ডি কিন্তু এতটুকুতেই জমাটবদ্ধ হয়ে থাকবে।

 

ধীরে ধীরে বাইরের জগৎ থেকে ছিটকে পড়বেন। আপনার চলাফেরা, খাওয়া থেকে সবকিছু যখন তাদের নির্দেশনা মোতাবেক চলবে সেখানে থাকবে না নিজেরও কোনও আলাদা পছন্দ অপছন্দ। ঠিক তেমনি কিছু সংখ্যক মেয়েকে একটি প্রতিষ্ঠানে লালনপালন করা হয়। যাদের একেবারে শিশুকাল থেকেই এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। বেঁধে দেয়া হয়েছে কিছু নির্দিষ্ট নিয়মানুবর্তী। সম্পূর্ণ কক্ষ, সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তাদের প্রতিটি সেকেন্ড উপরমহল থেকে নির্ধারিত। ছোটবেলার সেই দু’জন বান্ধবী ভিভিয়েন আর সোফিয়া একদিন তাদের নিয়মিত এলার্মে সাড়া দিয়ে সিসি ক্যামেরা সামনে স্বাভাবিক ভাবে নিজেদের পরিস্কার প্রমাণ করতে যায়। কিন্তু সেদিন এক মেয়েকে সাহায্য করতে গিয়ে কিছুটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যায় ভিভিয়েন, এবং অল্পের জন্য সে তার নির্ধারিত সময়ে নিজেকে পরিস্কার প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন গার্ড এসে তাকে আলাদা কক্ষে শাস্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, ভিভিয়েন বারবার কান্না করেও সোফির কোনও সহায়তা পায়নি, কারণ সোফি নিজেও যে ঘাবড়ে গিয়েছিল। এরপর আর কখনো ভিভিয়েন আর সোফিয়াকে একসাথে দেখা যায়নি। কেউ কখনো অপরজনকে খোঁজার চেষ্টাও করেনি। কারণ তাদের সামর্থ্য যে অন্যের হাতে বন্দি।

 

বেশ কিছু বছর পর যখন তাদের বয়স ষোল হয় এবং তারা লেভেল সিক্সটিনে পা রাখে, তখন নিচের লেভেল থেকে বিভিন্ন শাখার উত্তীর্ণদের আবার একসাথে লেভেল সিক্সটিন অর্থাৎ সর্বশেষ লেভেলে স্থানান্তর করা হয়। আর ঠিক তখনি আবারও দেখা হয়ে যায় ভিভিয়েন আর সোফিয়ার। যদিও প্রথমদিকে ভিভিয়েন পূর্বের ঘটনার জন্য সোফির সাথে একেবারেই কথা বলতে নারাজ। কিন্তু সোফি ভিভিয়েনকে অন্যকিছু বুঝানোর ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছিল এবং উপরমহল থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যেসব ঔষধ প্রতিদিন দেয়া হয়, তা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বুঝানোর চেষ্টা করে চলছিল। দেরিতে হলেও একসময় বুঝতে পারে, তাদের সাথে ধোঁকা হচ্ছে। যদিও তাদের বলা হয়, তাদের দত্তক নেয়ার জন্য প্রতিদিন রাতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসে। কিন্তু তারা খেয়াল করে জানতে পারলো যে, যারা আসে তারা আসলে একেকজন ব্যবসায়ী ক্লায়েন্ট। তাদের সাথে হতে পারে চলে ভিন্ন কোনও চুক্তি৷ কিন্তু জানা নেই কারও। সে কারণ খোঁজে বের করার জন্য দু’জন একসাথে সর্বাধিক চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। অনেক সাহস আর বুদ্ধিদীপ্ততায় অবশ্য শেষদিকে তারা সেখান থেকে বের হতে পারে এবং সেই ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য জানতে পারে।

 

কিন্তু সেই উদ্দেশ্যগুলো কী? আর এতে আসলে জড়িত কে কারা? আদৌও কি কোনও প্রমাণ আছে তাদের কাছে? যখন সম্পূর্ণ কাহিনি জানতে এবং বুঝতে পারবেন, আসলেই কতটা মাস্টারপিস সাইলেন্ট কিলার এই মুভিটি।

নিজের মতামত

কানাডিয়ান মুভি সম্পর্কে একটু বাড়তি জানার ইচ্ছায় এই মুভিটি হঠাৎ সামনে আসে। সেই থেকে মুভি দেখার আগ্রহ জন্মে। সত্যিই অসাধারণ থ্রিলার ছিল। তবে আমি নেগেটিভ দিকের কথা বললে বলব, মুভির স্ক্রিনপ্লে মাঝদিকে কিছুটা স্লো ছিল, আর কিছু কিছু বাড়তি সংযুক্ত মনে হয়েছে। বাকি সব একেবারে দারুণ ছিল।

Leave a comment

Name *
Add a display name
Email *
Your email address will not be published