মুভি

মিট ডাভ (Meet Dave) – ২০০৮ মুভি রিভিউ (কমেডি মুভি হিসেবে দারুণ উপভোগ করবেন)

মিট ডাভ একটু কম রেটিং মুভি হওয়া স্বত্বেও ভালো লাগার একটা মুভি নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। আর হ্যাঁ, হাস্যরসাত্মক কিংবা বিনোদনের খোরাক জাতীয় মুভির ক্ষেত্রে অবশ্য আমি যুক্তি আর রেটিং এ বিশ্বাস রাখি না। হাসির জন্য দেখব হাসতে পারলেই হলো, যুক্তি দিয়ে কী হবে! তো যাহোক, মুভির নাম শুনেই বুঝা যাচ্ছে, আমরা কারও সাথে দেখা করতে যাচ্ছি, যার নাম Dave. আমরা নিজেরাও যেহেতু সব অসাধারণ মানুষ তাই সাধারণ মানুষের সাথে তো অবশ্যই দেখা করব না, দেখা হবে একেবারে অসাধারণ কারও সাথে। যার আকৃতি, গড়ন, গঠন সবকিছু দেখেই আপনি অট্টহাসিতে মেতে উঠবেন।

মিট ডাভ মুভি ইনফো

ব্রিয়ান রবিনস পরিচালিত এই মুভিটি ২০০৮ সালে মাতিয়েছে সেরা সেরা হাস্যরসাত্মক মুভির নাম দাপট। ১৯৯৫ সালে Primetime Emmy Awards এর নমিনেশনও পেয়েছিল বটে। ব্রিয়ান রবিনস মূলত বিংশ শতাব্দীর বেশ ভালো পরিচিত মুখ ছিলেন, অভিনয়ে ছিল তার বেশ সুনাম আর ক্যারিয়ারের খাতায় লিখেছেনও অসংখ্য মুভি। তাছাড়া পেশাগত জীবনে প্রোডিউসার, ডিরেক্টর এবং রাইটার হিসেবেও

মুভিঃ মিট ডাভ 
ইন্ডাস্ট্রিঃ হলিউড
ভাষাঃ ইংলিশ
দেশঃ ইউএসএ
রানটাইমঃ ৯০ মিনিট
রিলিজ সালঃ ২০০৮
আইএমডিবি রেটিংঃ ৫/১০
পার্সোনাল রেটিংঃ ৬.৫/১০
পরিচালকঃ ব্রায়ান রবিনস
কাস্টঃ এডি মারফি, এলিজাবেথ ব্যাংকস
জনরাঃ অ্যাডভেঞ্চার, কমেডি, ফ্যামালি

মিট ডাভ এর কেন্দ্রীয় চরিত্র

আমরা আগেই বলেছিলাম অসাধারণ একজনের সাথে আমরা দেখা করতে যাচ্ছি তার নাম Dave. অদ্ভুত এবং অবিশ্বাস্য এই চরিত্রে দেখা মিলবে Eddie Murphy এর। যেহেতু সম্পূর্ণ মুভিতে হাসির অন্যতম উৎস এই সফল ব্যক্তি, সেহেতু তার উপর আস্থা রাখায় যায়। কৃষ্ণাঙ্গ এই অভিনেতা শুধু অভিনয়েই নয়, তার ক্যারিয়ারে রয়েছে রাইটার এবং প্রডিউসারের ট্যাগও। তার অভিনীত বেশ কিছু মুভি অর্জন করেছে শ্রেষ্ঠাত্বক সম্মান। ব্যক্তিগতভাবে পুরুষ্কারও হাতিয়ে নিয়েছেন বেশ কিছু। এমনকি ২০০৭ সালে অস্কারেও মনোনীত হয়েছিলেন এই বিখ্যাত অভিনেতা। পাশাপাশি একাধিক বার গোল্ডেন গ্লোব নমিনেশন পেয়েও বারবার যেন সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছিল আসল জয়ের স্বাদ নিতে। কিন্তু অবশেষে তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সফল মুভি Dreamgirls দিয়ে ২০০৭ সালে পেয়ে যান গোল্ডেন গ্লোব বিজেতার পুরস্কার। মর্ফি অবশ্য কমেডি মুভি করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তার ঝুলি থেকে ভালো লাগার কিছু মুভি The Nutty Professor, DreamGirls আমার বেশ ভালো লেগেছিল।

মুভিটির মূল প্লট

নিউইয়র্ক শহরে বসবাসরত জোস মরিসন নামক এক বালক তার টেরিস্কোপ দিয়ে তারা দেখার সময়, সেখান থেকে পৃথিবীর দিকে কিছু একটা পড়তে দেখে, যা অনেকটা টেনিস বলের মতো। আগ্রহের বশত সে এটা তার কাছে রেখে দেয়। তার পর মূহুর্তে দেখা যায় আর এক লঙ্কাকাণ্ড, যেখানে একজন লোক মহাকাশ থেকে প্রচুর বেগে ভূপৃষ্ঠে উপচে পড়ছে, যেহেতু ল্যান্ডিং এর সময় তার মাথা সম্মুখ ভাবে ছিল, ল্যান্ডিং এর পরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই ব্যক্তির মুখ সহ সারা শরীর বালুর উপর বন্দুকের তীরের মতো গেঁথে আছে বা বলা যায় কেউ যেন কোনো ভাস্কর্য দাঁড় করিয়ে রেখেছে। খানিক বাদে যখন তার হুশ আসে সে হাঁটা চলে শহরের দিকে। কিন্তু এখানকার মানুষের হাঁটার স্টাইল পোশাক স্টাইল যে অদ্ভুত রকমের। শিশু যেমন তার বৃদ্ধিরত অবস্থায় হুবহু বড়দের নকল করে, ঠিক সেভাবে সেও আশেপাশের বাকিদের থেকে বিভিন্ন কিছু নকল করে চলার চেষ্টা করছে, অর্থাৎ নতুন কিছু শিখছে। বেচারা যখন হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় এসে দাঁড়াল তখন বাঁধে আরেক বিপদ। ফুটওভার ক্রসিং এর যেসকল লাইট দেয়া সেসব যেন তার মাথায় আসেনি। কিছু একটা নিজের মতো বুঝে নিয়ে যেই রাস্তায় পা বাড়ালো, ওম্নি এক মহিলার গাড়ি এসে সোজা উপরে দিলো, কিন্তু না, তার তেমন কিছুই হয়নি। পায়ের দিকে যাই খানিকটা মোচড়ে গেছে, তা ঠিক করার জন্য হঠাৎ তার কানের ভেতর দিকে আবির্ভাব হয় নতুন আরেক মানুষের। বিষয়টা শুনে চমকে গেলেন, তাইতো?

Related Post

হ্যাঁ সেরকমই, আর যে ইঞ্জিনিয়ার বের হয়েছে সে একা না, তার সাথে রয়েছে সুবিশাল এক দল। যাদের বসবাস ডেভ এর শরীরের ভেতর। অর্থাৎ ডেভ কোনো মানুষ না, হুবহু মানুষের মতো স্রেফ একটা অবয়ব। যার ভেতরে রয়েছে পিঁপড়ের মতো অসংখ্য মানুষ। এত ছোট মানুষ, তারা তাহলে কে? নিশ্চয়ই পৃথিবীর বাইরের কোথাও থেকে এসেছে। যাকে সংক্ষেপে আমরা এলিয়েন বলি। তাদের ইউনিটে রয়েছে পরিচালক, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, শ্রমিক সহ নানান পেশার লোক। যাদের উদ্দেশ্য শুধু একটাই, মিশন ডেভকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। প্রয়োজনের তারা ডেভের শরীরে ভেতর বানিয়ে নিয়েছে সুবিশাল এক অফিস, যেখানে উপর থেকে নিচের দিকে যাওয়ার জন্য রয়েছে আলাদা লিফট। তো বুঝতেই পারছেন তাদের সাইজ ঠিক কতটুকু। এই সিনগুলোতে দম ফাটানো হাসিতে মেতে থাকবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু শেষের দিকে দেখা যায় টিম ডেভ কিছু একটা নিতে এসেছে। পৃথিবীতে তাদের আসার উদ্দেশ্য কিছু একটা সাথে করে ফিরিয়ে নেয়া যাওয়া। তবে কি পারবে তা ফিরিয়ে নিতে?

 

ব্যক্তিগত অভিমত

যেমনটা আগে বলেছি কমেডি মুভি হিসেবে দারুণ উপভোগ করবেন। তবে মুভির ক্ষেত্রে বলব, মুভিতে প্রচুর অযুক্তিক জিনিস দেখানো হয়েছে, যা সাধারণ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার সাথে অসম্পৃক্ত। সেগুলো যদি আর একটু বাস্তবিক করতে পারত তবে নিঃসন্দেহে আরও বেটার হতো। তাও সার্বিকভাবে বললো, মন খুলে হাসতে চাইলে দেখে ফেলতে পারেন একবার মুভিটি।

ধন্যবাদ…

View Comments

This website uses cookies.