এই মুভিটিকে ২০২০ সালের অন্যতম সমালোচিত হলিউড মুভি বলা যায়। নানান জটিলতা এবং সংগত কারণে পরিবর্তন করা হয়েছে একাধিকবার রিলিজ ডেট। “Westworld” খ্যাত পরিচালক Craig Zobel ছিলেন এই মুভির পরিচালনায়। যার সম্পর্কে বলার আগে আমি শুধু একটা কথায় বলব, Westworld সিরিজ ইতিহাসের অন্যতম সফল একটি সিরিজ এবং আইএমডিবি রেটিংএ রয়েছে ভালো অবস্থান। যার ঝুলিতে রয়েছে ৪ টি গোল্ডেন গ্লোব সহ অসংখ্য পুরস্কার, যা দেখার পর পরিচালনার প্রশংসা না করে উপায় নেই। তো বুঝতেই পারছেন নিঃসন্দেহে সুনিপুণ কিছু পরিচালনা আমরা দেখতে পাব এই মুভিতে।
অ্যাকশন, হরর, থ্রিলার জনরা নিয়ে নির্মিত হয়েছে এই মুভিটি। ২০২০ সালের ১৩ই মার্চ এই মুভিটি রিলিজ পায়। মুভিটির সময়কাল ছিল ৯০ মিনিট। বেটি গিল্পিন, হিলারি সোয়াঙ্ক ছিল এই মুভি প্রধান চরিত্রে। আরও কিছু তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি আপনার রিভিউটি পরিপূর্ন হতে, তো দেখি নিচে আর কি কি তথ্য রয়েছেঃ
মুভিঃ দ্যা হান্ট
ইন্ডাস্ট্রিঃ হলিউড
ভাষাঃ ইংরেজি
দেশঃ ইউএসএ
রানটাইমঃ ৯০ মিনিট
রিলিজ সালঃ ২০২০
আইএমডিবি রেটিংঃ ৬.৫/১০
পার্সোনাল রেটিংঃ ৭/১০
পরিচালকঃ ক্রেগ জোবেল
কাস্টঃ বেটি গিল্পিন, হিলারি সোয়াঙ্ক
জনরাঃ অ্যাকশন, হরর, থ্রিলার
মুভির প্রধান চরিত্র বলতে গেলে আমি দু’জনের কথা উল্লেখ করতে চাইব, একজন ক্রিস্টাল (Betty Gilpin), অপরজন এথেনা (Hilary Swank)। যাদের একজন ভিক্টিম, যেখানে তাকে কোনো একটা সংঘবদ্ধ টিম বা ইউনিট মৃত্যু খেলায় অংশ নিতে বাধ্য করেছে। আর অপরজন একজন ব্যবসায়ী, যে কি-না সাধারণ আম-জনতার ফেইক, মিথ্যে বানোয়াট আর্টিকেলের কারণে নিজেদের অবস্থান হারাতে চলেছে। তাদের কেমিস্ট্রি শুনতে যেমন রসাত্মক মনে হচ্ছে, মুভিতেও ঠিক তেমনই একটা অসাধারণ ফাইট সিন পেয়ে যাবেন।
শুরুর দিকে দেখা যায় একটি প্রাইভেট প্লেনে মাতাল টাইপের একজন এসে বাকিদের দ্বিধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। লোকটি এতটাই অস্থিরতায় ছিল যে সে নিজের অবস্থান কিংবা এখানে কী চলছে কিছুই আঁচ করতে পারছিল না। প্লেনের একজন তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলো যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, তারপর মেঝেতে শুয়ে বিশেষ চিকিৎসা দেয়ার আশ্বাস দেয়। তার ঠিক পরের সিনটা দেখেই আপনি থ হয়ে যাবেন, তারা আসলে চাচ্ছে কী? একজন স্বাভাবিক মানুষের উপর এভাবে বর্বর হামলা?
তার পরের সিনে, কিছুক্ষণ পর আরও কয়েকজন নিজেদের আবিষ্কার করে একটা উন্মুক্ত দ্বীপে, যাদের সবার মুখ বেল্ট দিয়ে তালা মারা। প্রত্যেকেই পরস্পরের অপরিচিত। এখানে কী হচ্ছে তার আদি-অন্ত সবকিছুই অজানা, সুবিশাল মাঠের মাঝখানে রাখা রয়েছে একটি শূকর ও অসংখ্য বন্দুকের ছড়াছড়ি। যখনি তারা বন্দুক নিয়ে নিজেদের বাঁধন খোলার চেষ্টা করলো, তৎক্ষনাৎ তাদের ওপর চলতে লাগলো বর্বর নৃশংস আক্রমণ। অজানা অদেখা বন্দুক থেকে ভেসে আসছে অগণিত গুলির রক্তাক্ত শব্দ, মূহুর্তেই সম্পূর্ণ জায়গাটি পরিণত হয়ে যায় এক মৃত্যুপরীতে। যারা বেঁচে আছে তাদেরও আর বুঝতে বাকি রইলো না যে, এখানে তাদের হান্টিং করা হচ্ছে, হিউম্যান হান্টিং, যা সাধারণত প্রাণীদের সাথে করা হয়। তাদের পালাতে হবে কিন্তু জানা নেই কীভাবে পালাবে। কী করবে তারা? কোথায় যাবে? যেদিকে চোখ যায় শুধু বিস্তীর্ণ বনভূমি। নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে একেকজন ছুটে যায় একেকদিকে।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশটি হলো, যখনি আপনি কাউকে মুভির মেইন হিরো ভাবতে শুরু করবেন তখনি দেখবেন কাহিনির মোড় ঘুরে নতুন কারও আগমন ঘটছে, অর্থাৎ বুঝে উঠা মুশকিল। তবে একজন আছে যার কথা না বললেই নয়, ক্রিস্টাল (Betty Gilpin) তার আক্রমনাত্মক স্টাইল আর বেঁচে থাকার এক অনন্য কনফিডেন্স আর বুদ্ধিমত্তা দেখে আপনি একটু স্বস্তির দেখা পেতে পারেন। নানা উত্থান-পতনের শেষে কতজন বেঁচে থাকতে পারবে? সে কি বিশেষ কেউ? আর যারা মারছে তারা কে? কী-ই বা তাদের উদ্দেশ্য? জানতে হলে দেখে ফেলুন, অন্যতম সমালোচিত এবং জনপ্রিয় এই মুভিটি।
তবে, হ্যাঁ, উদ্ভট এই রক্তাক্ত মৃত্যুপুরীতে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে অদ্ভুত আর ভিন্ন ভিন্ন হাস্যকর কিছু সিন দেখে আপনি বাধ্য হবেন ফিক করে হেঁসে দিতে।
ইন্টারনেটে অযাচিত অনেক কিছুই আমরা নিয়মিত শেয়ার দিয়ে থাকি অথবা ভাইরাল হতে দেখি। কিন্তু এই ইন্টারনেট কন্সপাইরেসি গুলোই অনেক সময়, অন্যের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে! মুভিতে মিডিয়া ভিত্তিক তথা আমাদের বর্তমান জীবন ধারাকে কেন্দ্র করে অনেক হিডেন মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, যা অবশ্যই শিক্ষণীয়।
নোট- যারা অতিরিক্ত কাঁটা-ছেঁড়া বা রক্তমাখা সিন সহ্য করতে পারেন না, তারা অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবেন।
This website uses cookies.