সুপার ৩০ মুভিটির বাংলা সাবটাইটেল (Super 30 Bangla Subtitle) বানিয়েছেন এলে ইমরান। সুপার ৩০ মুভিটি পরিচালনা করেছেন বিকাশ বাহল। এত সুন্দর একটা গল্পের লেখক ছিলেন সঞ্জীব দত্ত। ২০১৯ সালে সুপার ৩০ মুক্তি পায় । ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজে এখন পর্যন্ত ১০,২৪১টি ভোটের মাধ্যেমে ৮.৪ রেটিং প্রাপ্ত হয়েছে মুভিটি। সুপার ৩০ মুভিটি বাজেট ৬০-৬৫ কোটি। বক্স অফিসে ২০৮.৯০ কোটি টাকা কোটি আয় করে।
সুপার ৩০ মুভি রিভিউ:
পড়তে মন বসে না?
লেখাপড়া করে কি লাভ?
শিক্ষাব্যবস্থা ঠিক নেই?
শিক্ষাই কি আজকের বাজারে সবচেয়ে বড় ব্যবসা?
এমন শত প্রশ্ন মনে জাগতেই পারে, তার সব উত্তর নিয়ে হাজির Super 30। ভারতের Anand Kumer এর জীবনী থেকে নেয়া সত্য ঘটনার উপর নির্মিত ছবিটি। একজন মেধাবী ছাত্র যে কিনা ইংল্যান্ডের এক জার্নালে দেয়া অমীমাংসিত একটি গণিতের সমাধানের মাধ্যমে পেয়ে যায় ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ। কিন্তু দারিদ্র্যতার দরুণ আর বিলাত যাওয়া হয় না আনান্দের। এরপর হঠাৎ পিতৃবিয়োগে সংসারের হাল ধরতে মা আর ভাইয়ের সাথে পাপড় বিক্রির ব্যবসায় নেমে পড়তে হয়। তারপর একদিন দেখা হয়ে যায় এক কোচিং পরিচালকের সাথে। উনি আনান্দকে তার আইআইটি ভর্তি পরীক্ষা কোচিং এ যোগ দেয়ার অফার দেন। দুর্দশার এমন সময় কোনো চিন্তা না করেই কোচিংয়ে পাঠদানের সিদ্ধান্ত নেয় সে। মজাদার আর চাতুর্যপূর্ণ পাঠদানের মাধ্যমে খুব কম সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠে, চলতে থাকে রমরমা টাকার খেলা।
এরপর একদিন এক পার্টি থেকে ফেরার সময় দেখে একটি ছেলে রাস্তায় বসে গণিতের সমাধান করছে। আনান্দও আগ্রহ নিয়ে তার সমস্যা সমাধান করতে যায়। তারপর আসার সময় রিকশাচালকের সাথে ঐ ছেলেটিকে নিয়ে আলোচনা শুরু করে। আলোচনার একসময় চালক রহস্যজনকভাবে তার বাবার একটি কথা বলে উঠে, ” এখন রাজার ছেলেই রাজা হয় না, রাজা সেই-ই হয় যে রাজা হবার যোগ্য “। কথাটি তার বিবেকবোধকে নাড়িয়ে দেয়। এরপরই সে সিদ্ধান্ত নেয় যেসব গরীব শিক্ষার্থী আছে যাদের পক্ষে টাকা দিয়ে এ্যাডমিশন এর কোচিং পড়া সম্ভব না তাদের খাওয়াদাওয়া, থাকাসহ এমন ৩০ জনকে সে পড়াবে। শুধু তাদের শিক্ষা দেবে, যোগ্য রাজা হিসেবে সমাজ এবং দেশে প্রতিষ্ঠিত করবে এই উদ্দেশ্য নিয়েই গড়ে তোলে নিজের কোচিং Super 30।
তারপর আসতে থাকে একের পর এক বাঁধা, যেখানে জীবনের নিরাপত্তা পর্যন্ত ছিল না, সেখানে নিজের লক্ষ্য থেকে একপাও নড়তে নারাজ আনান্দ কুমার। হয়তোবা এই কাহিনী অনেকেই জানে, গতবছর KBC তেও আসেন তিনি। কিন্তু কিভাবে তিনি সংগ্রাম করেছেন সেই ঘটনাই তুলে ধরা হয় এই ছবিতে।
মুভির একটি দৃশ্যপটের কথা না বলে থাকতে পারলাম না (স্পয়লার)। শেষের দিকে আনান্দকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এসময় সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচতে এবং নিজেদের শিক্ষককে বাঁচাতে সেই ৩০ জন এক অভিনব কায়দায় লড়াই করে।
যাকে এক কথায় বলা চলে, ” শিক্ষিত বনাম অশিক্ষিত ” দের যুদ্ধ। অশিক্ষিতদের হাতে ছিল অস্ত্র আর শিক্ষিতদের কাছে ছিল তাদের মেধা। দিনশেষে মেধারই বিজয় ঘটে।
ছবি সম্পর্কে আর কিছু বলতে চাই না। বাকিটা নিজেরাই দেখে নিয়েন। অভিনয় নিয়ে কিছু বলার নেই, সবাই যার যার জায়গায় সেরা ছিল।
আর শেষ সংলাপটা! থাক এটা নাইই বলি। কিন্তু সংলাপটা কুরআন, গীতার মতোই পবিত্র এবং চিরসত্য। কথাটার মর্ম বুঝে থাকলে দেখবেন আপনার বিবেক আপনাকেই প্রশ্ন করে বসতে পারে। সত্যই কি তাই? মুখে না আসলেই মনে মনে হয়তো উত্তরটা হ্যাঁ – ই হবে।
রিভিউ করেছেনঃ Pranto Debnath
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের।