Thondimuthalum Dhriksakshiyum (2017) Bangla Subtitle – গল্প যখন বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি মেলে ধরে

থনদীমুঠালুম ধরিকসাকশিয়াম মুভিটির বাংলা সাবটাইটেল (Thondimuthalum Dhriksakshiyum Bangla Subtitle) বানিয়েছেন শাকিল মিকু। থনদীমুঠালুম ধরিকসাকশিয়াম মুভিটি পরিচালনা করেছেন দিলীশ পোথান। এত সুন্দর একটা গল্পের লেখক ছিলেন সজীব পাজহুর। ২০১৭ সালে থনদীমুঠালুম ধরিকসাকশিয়াম মুক্তি পায় । ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজে এখন পর্যন্ত ৩,০১৪ টি ভোটের মাধ্যেমে ৮.২ রেটিং প্রাপ্ত হয়েছে মুভিটি।

সাবটাইটেল এর বিবরণ

  • মুভির নামঃ থনদীমুঠালুম ধরিকসাকশিয়াম
  • পরিচালকঃ দিলীশ পোথান
  • গল্পের লেখকঃ সজীব পাজহুর
  • মুভির ধরণঃ ড্রামা, থ্রিলার, ক্রাইম
  • ভাষাঃ মালায়লাম
  • অনুবাদকঃ Shakil Miku
  • মুক্তির তারিখঃ ৩০ জুন ২০১৭
  • আইএমডিবি রেটিংঃ ৮.২/১০
  • রান টাইমঃ ১৩৫ মিনিট

থনদীমুঠালুম ধরিকসাকশিয়াম মুভি রিভিউ

অসাধারণত্বের ছোঁয়া বোধহয় মোরা অবলোকন করে যেতে পারি, সাধারণ গল্পের মোড়লে নিখুঁত শৈল্পিক শতভাগ খাঁটি উপকরণ শোভিত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।গল্প যখন আমাদের বাস্তবিকতার প্রতিচ্ছবি মেলে ধরে, তাতে মোরা সহজে নিজেদের মিলিয়ে নিতে পারি সে অবস্থানের মধ্য দিয়ে। জাত-ধর্ম, সামাজিক প্রথা, দুর্ভিক্ষ অথবা নির্জলা আমাদের মস্তিষ্ক কে করে তুলে অসহায়ত্বে ঘেরা নিষ্ঠুর স্বার্থলোভী মানুষরূপে।

যেথায় ন্যায়-অন্যায়ের বিভীষিকায় মোরা নিজেদের অবস্থান শক্তভাবে টিকিয়ে রাখতে বদ্ধ পরিকর। যার কারণে আমরা, আমাদের ই হাতে গড়া নিয়ম-নীতি ভঙ্গন করে হলেও নিজেদের অবস্থান মেলে ধরতে সদা প্রস্তুত থাকি। অন্যদিকে সামনে থাকা ব্যক্তিত্ব যদি মোদের সে অবস্থান নিয়ে সঠিক মত পেষণ ও করে, সেথায় মোরা তাদের জোরপূর্বক কিংবা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে নিজেদের দম্ভ অটুট রাখতে মরিয়া হয়ে থাকি। কেননা ব্যক্তি মানুষের সকল নীতিকথা আপন অবস্থান হারানোর ভয়ে সততার সঙ্গ ত্যাগ করতে পিছপা হয় না।

লক্ষ্য কোন ব্যক্তিসত্ত্বা কে নীচু বা হেয় করার চিন্তাধারায় উক্তি পেষণ করা হয় নি। বরং এই সমাজে টিকে থাকা নিজ অবস্থান নিয়ে কেউ হয়তো অসহায়ত্ব কে করেছে বরণ আবার কেউ করে যাচ্ছে নানান পদ্ধতি অবলম্বন করে নিজ অবস্থানের রক্ষণাবেক্ষণ।আমাদের সমাজের এই দিকগুলো নিয়ে ব্ল্যাক কমেডি নির্ভর গল্পটি সাজানো হয়েছে। গল্পে পরিলক্ষিত করা যায় যে, কেরালার এক গ্রামে বেড়ে উঠে প্রাসাদ ও শ্রীজা কে ঘিরে। প্রসাদ-শ্রীজার প্রেমের সম্পর্কে শ্রীজার পরিবার জাত-বর্ণের নামে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। তারাও বিয়ে করে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।

এভাবে ছয় মাস কেটে গেলেও স্বামী-স্ত্রী দুজনের ই নিজ গ্রামের মায়াশোভিত পিছুটান বার বার তাড়না দিয়ে বেড়ায়। এমন ই একদিন বাসে চড়ে গন্তব্যে যাওয়ার প্রাক্কালে শ্রীজার চোখে ক্লান্তির ঘুম তার চোখজোড়া বন্ধ করে দেয়। পেছনে বসা অদ্ভুত লোকটি যেন এমন সুযোগের ই অপেক্ষায় পরিলক্ষণ করছিল। যখন ই লোকটি শ্রীজার চেইন কৌশলে কেটে হাতে নেয়, অমনি শ্রীজা দেখে ফেলে চোরটির কীর্তি। চোরটি অতর্কিত আশংকাজনত পরিস্থিতি বুঝে মুখে পুরে নেয় চেইনটি। শ্রীজা তার স্বামী প্রাসাদ বাসের অন্যান্য লোকদের চেঁচিয়ে একত্রিত করলে, লোক চোর কে ধরে বেধড়ক মারতে থাকে। পরে সিদ্ধান্ত হয় চোর কে পুলিশে দিবে।

Related Post

সিদ্ধান্তানুযায়ী নিকটবর্তী থানায় চোর কে নিয়ে যায় প্রাসাদ ও শ্রীজাসহ বাসের কিছু লোক। থানায় পুলিশ নানান ভাবে জেরা করে জানতে পারে চোরের নাম ও প্রাসাদ। পুলিশ নানান প্রহার ও জিজ্ঞেসাবাদ সত্ত্বেও চোর প্রাসাদ বারবার স্বীকারোক্তি দিয়ে যায়, চেইন তার কাছে নেই। পুলিশ ও দ্বিধায় পড়ে যায় এমন সামান্য কেসের জটিলতায়। পুলিশ সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চোর প্রাসাদ ও প্রাসাদ-শ্রীজা দম্পতি কে কিছুদিন থানার চারপাশে থাকতে হবে, চেইনের রহস্য উদঘাটনের জন্য।শ্রীজা যে মূল্যেই হোক তার বিবাহের স্মৃতি জড়ানো ২ ভরি সে স্বর্ণের চেইন চাই….ঘটনার মূল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে!!!!পরিচালক দিলেশ পোথেন আমাদের চারপাশের সহজ গল্প উপস্থাপন করেছেন তার শৈল্পিক আঙ্গিকে। বলতেই হয়, সিনেমার তার ছাপ স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান। স্ক্রিনপ্লে সিনেমার ধারানুযায়ী সাবলীল ভঙ্গিতে এগিয়েছে।

এক্ষেত্রে ধীরগতিসম্পন্ন বলে দ্বিমত করতে আসা বোকামির শামিল হবে, কেননা গল্পের অর্থবহতা সিনেমার এমন ই স্ক্রিনপ্লে ডিমান্ড করেছে।সিনেমাটোগ্রাফির ব্যাপার টা বেশ গভীর ও গাঢ় ব্যাপার। কিন্তু যতটুকু বুঝি, সে অনুযায়ী বিবেচনা করলে পরিলক্ষিত হয়, সিনেমার আনুষঙ্গিক বাহ্যিক লোকেশান যেমন চমকপ্রদ ছিল; ঠিক তেমন ই অভূতপূর্ব ছিল সিনেমাটোগ্রাফি। এমনকি থানার ভেতরের কালার গ্রেডিং বা সিনেমাটোগ্রাফি দুটোই সিনেমার ডেপথে অতি সহজে দর্শক অক্ষিজোড়া যুক্ত করতে পারদর্শী।ক্যামেরার শট গুলো জীবন্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে অপলক চেয়ে থাকা দুই অক্ষিজোড়ায়। কারণ, একটা দৃশ্য ও এমন মনে হবে না যে দৃশ্যটা খাপছাড়া লাগছে। পুলিশ সদস্যদের চোর কে পাকড়াও করার দৃশ্য হতে শুরু করে, চোরের পুলিশ কে দেখিয়ে দেওয়া বাহিরের পরিবেশের আন্তঃকোন্দল সব দৃশ্য ক্যামেরা শটে আরো প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড সিচুয়েশান অনুযায়ী যথা উপযুক্ত ছিল। গানগুলো ও ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড ভাবে সিচুয়েশানে ডিমান্ড করছে বলে আরো বেশি অস্থির লাগছে।

অভিনয়শিল্পী দের আলোচনা করতে গেলে কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকা ন্যাশানাল এওয়ার্ড জয়ী অভিনেতা সুরাজ বেঞ্জারামোদু তার সহজ-সরল সাবলীল চরিত্র থেকে শুরু দূর্ঘটনার স্বীকার অসহায়ত্বতা নিদারুণ ভঙ্গিতে ফুটিয়ে তুলেছেন নানান পরিস্থিতিতে অভূতপূর্ব সব এক্সপ্রেশনে। যার চরিত্র আমাদের মাঝে ফুটে উঠেছে আমার-আপনার মত কোন পুরুষের প্রতিনিধিত্ব করছে। যেথায় সুরাজের অভিনয় আমাদের কে এই অভিনয়শিল্পীর অভিনয় শৈলতা কে নতুনভাবে ভালোবাসতে বাধ্য করবে। নিমিষা সাজায়ান একেবারে নতুন মুখ সিনেমায়। কিন্তু তার অভিনয়ের পরিপক্কতা দেখে মনে হবে যেন, এই মেয়ে আজীবন সিনেমার সাথে জুড়ে আছেন। তার সাবলীল অভিনয় আর ক্ষেত্রানুযায়ী বেশ ভাল মানের এক্সপ্রেশন আমাদের মনে দাগ কেটে যাবে।ফাহাদ ফাসিল কতটা সাবলীল ন্যাচারাল অভিনেতা, সে কথার জানান নতুনভাবে দিতে হবে না আশা করছি।

ফাহাদ ফাসিলের চরিত্র এই সিনেমার নির্জীব আভায় যেন প্রাণের সঞ্চার নিয়ে এসেছে। ফাহাদ ফাসিলের এক্সপ্রেশন গুলো এভাবে দিয়েছেন কোথাও তাকে অসহায় কোথাও ধূর্ত আবার কোথাও পরিস্থিতির বেড়াজালে বন্ধি যুবকের পরিচয় দিয়েছেন। তার বলা সংলাপ বলার ভঙ্গি ও যেন সিনেমায় নিয়ে এনেছে শৈল্পিক মাত্রা। ফাহাদ ফাসিলের চরিত্র এই সিনেমায় শো-স্টিলার হিসেবে পরিদর্শিত করতে তিনি সক্ষম হয়েছেন।

কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকা এই ৩ জন ছাড়াও অন্যান্য অভিনয়শিল্পী দের কাজ ও সাবলীল লেগেছে।এটি একটি শিল্প, যার মানদন্ড সকল প্রকারের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম নেগেটিভ ভাইভের বাহিরে। নিঃসন্দেহে আমার চোখে দেখা সবচেয়ে সেরা মালায়ালাম মাস্টারপিস সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম সিনেমা বলে সিনেমাটি বিবেচিত। আজীবন এমন সিনেমা স্মৃতিজুড়ে অঙ্কিত থাকবে।

রিভিউ করেছেনঃ Rakibul Hasan Rakib

This website uses cookies.