নিপা ভাইরাসের মহামারী নিয়ে বাস্তব ঘটনা নির্ভর চলতি বছরের তুমুল প্রশংসিত ও মালায়ালাম সিনেমা ভাইরাস। ভাইরাস মুভিটির বাংলা সাবটাইটেল (Virus Bangla Subtitle) বানিয়েছেন শাকিল মিকু। ভাইরাস মুভিটি পরিচালনা করেছেন আশিক আবু। নিপা ভাইরাসের মহামারি এই বাস্তব গল্পটি লিখেছেন মুহসীন পারারী, শারফু ও সুহাস। ২০১৯ সালে ভাইরাস মুক্তি পায় । ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজে এখন পর্যন্ত ৯২৩ টি ভোটের মাধ্যেমে ৮.৩ রেটিং প্রাপ্ত হয়েছে মুভিটি। সিনেমাটির প্রেক্ষাপট পুরোটা হাসপাতাল ঘিরে বলেই ব্যবহৃত মেডিকেল টার্ম শব্দগুলো ইংরেজি রাখার চেষ্টা করছি। প্রত্যাশা করছি, চমৎকার সিনেমাটির বাংলা সাবটি প্রত্যেকের পছন্দ হবে।
প্রকৃতির দুর্বোধ্য খেলায় অবিশ্রান্ত মন বিচলিত নাহয়ে কি পারে দুদন্ড সুখের হাতছানি জীবনে মাখাতে? আধুনিকতার নিত্যনতুন মোহনার বেড়াজালে বয়সের সীমারেখা কোথায় যেন মিলিয়ে যাচ্ছে দুর্নিবার অবিসম্ভাবী মৃত্যুর অমানিশায়। চিরকাল চোখের সামনে ভেসে বর্ণিল সুখকর হাসিমাখা মুখশ্রীও যেন দুরারোধ্য রোগের জ্বলাঞ্জলিতে কেড়ে নিচ্ছে প্রিয় মানুষটিকে। মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে একদিন সবাইকে কাঁদিয়ে ঠিকই ওপারে পাড়ি জমায়। সেই সাথে ধ্বংস হয়ে যায় একটি পরিবার।
২০১৮ সালের কেরালার কোঝিকোডে সহ আশেপাশের বেশকিছু এলাকাজুড়ে ঘটে যাওয়া নিপা ভাইরাসের মর্মান্তিক ঘটনাকে ঘিরে নির্মিত ভাইরাস সিনেমাটিতে ফুটে উঠেছে জীবনযাত্রার অসহায়ত্বের ধাপগুলো। হাসপাতাল মুখী জীবনের অমানিশা কতটা ভয়াবহ, দুরারোগ্য রোগীর পরিবার সেটাই ভালোই জানে। টানা ডায়ালাইসিস করতে করতে স্নেহময়ী মা আমার চিরকালের জন্য ছেড়ে ওপারে চলে গেলেন। মাকে নিয়ে হাসপাতালে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত মনে হতো, আল্লাহ মাকে এত কষ্ট দিও না। আম্মু সুস্থ হয়ে সাথে ফিরে যাক। একদিন সে অপেক্ষার অবসান মর্মান্তিক আকারেই ঘটলো।
একের পর এক রোগী অদ্ভুতুড়ে লক্ষণ নিয়ে হাজির হচ্ছে হাসপাতালে। শুরুতে প্রচুর জ্বর আর বমি দেখে ডেঙ্গু হয়েছে কিনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ দেখেই অনেকটা হতবিহ্বল ডাক্তারেরা। পরক্ষণেই সারা শরীর আকড়ে যাওয়া সহ সীমাহীন যন্ত্রণা আর রক্তচাপ প্রচুর বেড়ে যাওয়া। পরীক্ষা করে জানা যায়- এটি নিপা ভাইরাস। পুরো স্বাস্থ্য ইউনিটের বিজ্ঞ কর্মকর্তাগণেরা মিলে একজোট হয়, এই দুরারোধ্য ব্যাধিকে রুখতে যাওয়ার। কেননা এটির কোন প্রকারের প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। তাছাড়া এটি ছোঁয়াচে। যার ফলে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার জোর সম্ভবনা রয়েছে। যা থেকে কেবল রোগী দেখাশোনা করা মানুষেরা নয় ডাক্তারদের ও মুক্তির পথ জানা নেই।
দূর্দান্ত সব টানটান উত্তেজনাপূর্ণ চমৎকার গল্পের গাঁথুনিতে চরিত্রগুলো বিকশিত হয়েছে স্বতস্ফূর্তভাবে। ক্ষণিকের জন্য আপনি ভুলেই যাবেন ছোট-বড় চরিত্রে অভিনীত চরিত্রগুলোর প্রত্যেকেই যে অনেক বড় মাপের সু-পরিচিত অভিনয়শিল্পী। কেননা প্রত্যেকেই মিশে গেছেন প্রেক্ষাপটের পটভূমির চরিত্রায়নে। যাকিনা দর্শকের মাঝে সেসময়ের বাস্তব চিত্র রূপেই ফুটে উঠবে।
সিনেমার প্রতিটি মুহূর্ত আমাকে দুমড়েমুচড়ে নিঃশেষ করে কাঁদিয়েছ। ঠিক এভাবেই মায়ের কষ্টগুলো দেখতাম। কখনো রেগে বলেও ফেলতাম- কেন তুমি কথা শুনতে চাও না! রোগীদের সেসব আতর্নাদ আর ডাক্তাদের দিকে চেয়ে থাকা অসহায়ত্বের দৃশ্য। যে কারো কল্পনা চেয়েও ভয়াবহ। অসাধারণ কাজটি চমৎকার নির্দেশনার বুননের পাশাপাশি অভিনব সু-দক্ষতা সম্পন্ন কলাকুশলীগণের অভিনয়ের দরুণ অপূর্ব এক ভালোলাগা কাজ করবে। যাকিনা আপনার মনের খাঁজে আজীবন টিকে থাকার মতো স্মরণীয় কাজ হয়ে থাকবে।
রিভিউ করেছেনঃ Saifuddin Shakil
This website uses cookies.